আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় চাঁদপুর জেলার অভ্যুদয়. চাঁদপুর-জেলা বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত ।
চাঁদপুর জেলা সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ-
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২৩°০০´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩২´ থেকে ৯১°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চাঁদপুর-জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৯৬ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ২০৮ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলা, মেঘনা নদী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর জেলা ও নোয়াখালী জেলা, পূর্বে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, মুন্সীগঞ্জ জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও বরিশাল জেলা। পদ্মা ও মেঘনা নদী দুটি চাঁদপুর শহরের কাছে এসে মিলেছে।

চাঁদপুর জেলার অভ্যুদয়:-
১৮৭৮ সালে ত্রিপুরা জেলা (পরবর্তীতে যা কুমিল্লা নামে পরিচিত) যে তিনটি মহকুমা নিয়ে গঠিত হয়, তার মধ্যে চাঁদপুর অন্যতম। ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলায় উন্নীত হয়। বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জে এম সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর।
অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদী বন্দর স্থাপন করেছিলেন। তার নামানুসারে নাম হয়েছে চাঁদপুর।

মুক্তিযুদ্ধের সময় চাঁদপুর ২নং সেক্টরের অধীনে ছিল। ১৯৭১ সালের ১২ মে পাকবাহিনী হাজীগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ৫০ জন লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ গণহত্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালালে পাকবাহিনীর ১৭ জন সৈন্য নিহত এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া, সূচীপাড়া এবং উনকিলার পূর্বাংশে বেলপুরের কাছে মিত্র বাহিনীর সাথে পাকবাহিনীর সংঘর্ষে মিত্র বাহিনীর ১৩ জন সৈন্য এবং পাকবাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতলব উত্তর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়।

- মুক্তিযুদ্ধের স্মারক: অঙ্গীকার (ভাস্কর্য), ফরিদগঞ্জ উপজেলার শহীদদের নাম ও ঠিকানা উৎকীর্ণ স্মৃতিফলক আমরা তোমাদের ভুলব না, মতলবের দীপ্ত বাংলাদেশ, চান্দ্রাকান্দি স্মৃতিসৌধ (সাদুল্লাহপুর, মতলব)।
- বধ্যভূমি: রঘুনাথপুর বাজার (হাজীগঞ্জ), হামিদিয়া জুট মিলস প্রাঙ্গণ, রায়শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ।
- গণকবর: নাসিরকোট (হাজীগঞ্জ)।
আরও পড়ূনঃ
2 thoughts on “চাঁদপুর জেলার অভ্যুদয়”